হুট করেই দেশে শীতের তীব্রতা অদ্ভুত মাত্রায় বেড়ে গেল। আসে না, আসে না করে শীত যখন আসলো তখন একেবারে কাঁপিয়ে দিয়েই আসলো। সকালের ঘুম ভাঙ্গা শরীরটাকে লেপের নিচ থেকে উঠাতে ইচ্ছে করে না। মেঝেটাও এতো ঠান্ডা বরফের মতো হয়ে থাকে, পা ফেলতে ইচ্ছে করে না।
শহরে ঝিমুনি একটা ভাব, কেবল চায়ের দোকানগুলো সরগরম। বাতাসের ধার যেন বেড়ে গেছে বহুগুণ, মিহি পাতলা বাতাস শীতল করে জমিয়ে দেয় শরীর। চোখ ভিজে আসে, নাক দিয়ে পানি গড়ানোর অবস্থা হয়। ১৬/১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা শহরে। তাতেই এমন কাঁপুনি। কিন্তু কখনো মনে হয়নি? আচ্ছা, বাংলাদেশে কি স্নোফল হয় না কেন?
প্রথমে জেনে নিই তুষারপাত কেন হয়। সূর্যের তাপে সমুদ্র, নদী, পুকুরসহ সব জলাশয় থেকে পানি বাষ্প হয়ে উপরে উঠে যায়। কারণ জলীয়বাষ্প বাতাসের চেয়ে হালকা। এই হালকা জলীয়বাষ্পই একসময় রূপ নেয় মেঘে। আমরা জানি, বাষ্প বায়ুমণ্ডলের যত ওপরে ওঠা যায়, তাপমাত্রা তত কমতে থাকে। তাপমাত্রা কমায় বাতাসে জলীয়বাষ্পের ধারণ ক্ষমতা কমতে থাকে। ফলে বায়ুমণ্ডলের একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় জলীয়বাষ্প বেশি হয়ে যায়।
ওই জলীয়বাষ্প বাতাসের সঙ্গে থাকা ধূলিকণা ও ধূম্রকণা আশ্রয় করে ঘনীভূত হয়। আরো ঠান্ডা হলে তা পরিণত হয় তুষার কণায়। একসময় বাতাস তাদের আর ধরে রাখতে পারে না। তখন তুষার কণাগুলো ঝরে পড়ে পাহাড় কিংবা মাটিতে।
বায়ুমণ্ডলে উৎপন্ন তুষারের পরিমাণ অনেক বেশি জমলেও তা পাহাড় পর্বতে অনেক কম ঝরে পড়ে। বাকিগুলো ঝরে পড়ে বৃষ্টি আকারে। তুষার কণাগুলো যখন অপেক্ষাকৃত উষ্ণ অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন সেগুলো গলে বৃষ্টির রূপ নেয় এবং মাটিতে ঝরে পড়ে। তবে পর্বতের উপরের তাপমাত্রা কম থাকায় সেগুলো জমে বরফ হয়ে থাকে।
তুষারপাত হতে ০ ডিগ্রি-এর নিচে তাপমাত্রা হতে হয়; যা বাংলাদেশে হয়না। এছাড়াও উত্তরে হিমালয় পর্বতে সাইবেরিয়ার হিমশীতল বাতাস বাধাগ্রস্থ হয়, তাই বাংলাদেশে তুষারপাত হয় না।
অনেকের মতে ২০৩০ সালে পৃথিবীতে তুষারযুগ আসতে পারে। সেই সময় উত্তরাঞ্চল বিশেষকরে পঞ্চগড়বাসী কিছুটা তুষারপাত উপভোগ করতে পারে। তবে বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায় কখনোই তুষারপাত হওয়ার সম্ভাবনা নেই!